নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ভোলা সদর উপজেলার কালীবাড়ির আলোচিত সাইফুল্লাহ আরিফ হত্যায় পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করেছে নিহতের পরিবার। ঘটনার পুনঃ তদন্তেরর পাশাপাশি সুষ্ঠু বিচার চেয়ে মামলাটি পিবিআই কিংবা সিআইডির কাছে হস্তান্তরের দাবি করেন তারা।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নিহত আরিফের বাবা বশির উল্লাহ মাস্টার দাবী জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে দুর্ঘটনা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। গত ৩০ আগস্ট ভোরে ফজরের নামাজ পড়তে বের হওয়ার সময় বাড়ির সামনে আরিফের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এসময় তার কপাল ভাঙা, মুখ ক্ষত-বিক্ষত ও হাতের কব্জি ভাঙ্গা রগ কাটা অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, ঘটনার দুই সপ্তাহ পার হলেও পরিবারের হাতে এজাহার কপি ও পোস্টমর্টেম রিপোর্ট দেওয়া হয়নি। বরং পুলিশের রিপোর্টে আরিফকে মাদকাসক্ত বলা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক বলে দাবি করেন তিনি। তাছাড়া এখনো ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত পুলিশ কিভাবে নিশ্চিত হলো যে আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়নি? যেখানে পুলিশ বলছে ময়না তদন্তে রিপোর্ট বের হতে দুই মাস সময় লাগবে, তার আগে তারা কিভাবে হত্যার বিষয়টিকে দুর্ঘটনা বলে পুলিশ তাদের তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে?
নিহতের বাবা আরও বলেন, আমার ছেলে কখনো মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিল না। এমনকি পুলিশ সুপার বলছে, আমার ছেলে বৃষ্টির মধ্যে ছাদে পায়চারি করতে গিয়ে পিচ্ছিল খেয়ে ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছে। অথচ ছাদের চারপাশে রেলিং দেয়া আছে এমনকি বৃষ্টির মধ্যে কেউ কি ছাদে পায়চারি করতে ওঠে? তাছাড়া যেখান থেকে পড়েছে বলা হয়েছে, ঠিক সেই জায়গার উপরে অনেকগুলো কারেন্টের, ডিসের ও ইন্টারনেটের তার ঝুলানো রয়েছে। এমনকি একটি বাশও ছিলো। যদি সেই জায়গা থেকেই পড়তো তাহলে তো সেখানে থাকা বাশ ও তারগুলো ছিড়ে যেতো। কিন্তু সেগুলোতো যেই অবস্থায় ছিলো সেই অবস্থায়ই আছে। এতে করে মনে হচ্ছে পুলিশের তদন্তে অসঙ্গতি ও সত্য গোপনের চেষ্টা স্পষ্ট।
সঙ্গত কারণেই তিনি মামলাটি পিবিআই বা সিআইডির কাছে হস্তান্তর করে দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশ সুপারের কাছে দাবি জানান।
উল্লেখ, গত ৩০ আগস্ট ভোর রাতে তার নিজ বাসার সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় তার মৃত দেহ পড়ে থাকতে দেখে তার পরিবার। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। দির্ঘ ১৪ দিন পর পুলিশ তাদের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করন। উক্ত তদন্ত প্রতিবেদনে পুলিশ দাবী করেন নিহত আরিফ তার বাসার ছাদ থেকে পরে মারা যায়।
অপরদিকে পুলিশের এই রিপোর্টকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবী করে নিহতের পরিবার বলছেন এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড।